অভ্রের স্লোগান, 'ভাষা হোক উন্মুক্ত"
Mehdi Hasan Khan। মাত্র ১৮ বছর বয়সে অভ্র কি-বোর্ড তৈরি করে বাঙলা ভাষায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন এই তরুণ। হ্যাঁ, ঠিক পড়েছেন। অভ্র কি-বোর্ড, যা দিয়ে এই মুহুর্তে আপনি লিখছেন।এই মানুষটা তার প্রতিভা কাজে লাগিয়েছিলেন অনলাইনে বাংলায় লেখার স্বাধীনতার জন্য। এই যে আজ অনলাইনে অভ্র কি-বোর্ড ব্যবহার করে এতো অসংখ্য মানুষ স্বাধীন উদ্যমে লিখছেন, অসাধারণ সব লেখা সমৃদ্ধ করছে বাঙলা ভাষাকে, সবই সম্ভব হয়েছে এই অসম্ভব প্রতিভাধর মানুষটির আবিষ্কারে। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে তাকে কেউ জানে না, তার চেহারা ক'জন চেনে, সন্দেহ আছে!
উন্মুক্ত এই সফটওয়্যার বাঁচিয়েছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। সরকারী দপ্তরগুলোতে অভ্র ব্যবহার হয়। নির্বাচন কমিশন ব্যবহার করে আমার আপনার পরিচয়পত্র বানাচ্ছে,পাসপোর্ট বানাচ্ছে, সরকারী ফাইলে হচ্ছে লেখা। সব কিছুর মূলে ছিল মেহদীর সেই এক রুমের পৃথিবী, একটা ছোট্ট কম্পিউটার আর পর্বতসম স্বপ্ন। স্বপ্নের নাম “অভ্র”। অভ্র, মেহদীর ব্রেইনচাইল্ড। সন্তান অর্কের মতোন।
কেউ কেউ বাকি সবার সব অর্জন কেড়ে নিয়ে বাকিদের দাবিয়ে "আমি আমি আমি আমি আমি" করতে করতে লাইমলাইটের সব আলো আকড়ে অর্জনের আলোয় উদ্ভাসিত হয়, আর কেউ কেউ অর্জনের বিশাল ঝুলি চুপচাপ পেছনে ফেলে আসে নিঃশব্দে! কেউ কেউ পরোক্ষভাবে বাংলা ভাষার কপিরাইট চায় মনোপলি বিজনেসম্যানের মত, মেরে দেওয়া, কেড়ে নেওয়া আইডিয়া নিয়ে দরকষাকষি করে আরও কিছু ধান্ধার লোভে, আবার কেউ কেউ নীরবে নিঃশব্দে ইতিহাস পাল্টে দেয় বিন্দুমাত্র খ্যাতি বা ফেইমের পরোয়া না করেই। প্রচারবিমুখ, পর্দার অন্তরালে থাকতে ভালোবাসা এই মানুষটি স্রেফ চেয়েছিল অনলাইনে বাংলা ভাষায় লেখা যেন সহজতর হয়। তাই অভ্রের স্লোগান, 'ভাষা হোক উন্মুক্ত"।
তবু একুশে পদকের জন্য একজন মেহদীর নাম বিবেচনায় আসে না। অভ্র টিমের নাম বিবেচনায় আসে না
প্রাণের প্রিয় বাংলা ভাষাকে, মায়ের মুখের মধুর বুলিকে যার জন্য এতো সহজে লিখতে পারছি, সেই মেহদীর জন্য সবটুকু শ্রদ্ধা,সবটুকু ভালোবাসা
সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপারটা হচ্ছে মেহদী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষার্থী ছিলেন, ডাক্তারি পড়বার সময়ের সেই কঠিন পরিস্থিতিতেই তিনি তার প্যাশনের পেছনে ছুটেছেন, তৈরি করেছেন অভ্র! আমাদের পরম সৌভাগ্য, এই মানুষটা বাংলাদেশে জন্মেছিলেন!
No comments